আশরাফুল আবারো আসতেছে জাতীয় দলে - History VS Story

Breaking

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Post Top Ad

Responsive Ads Here

Thursday, August 23, 2018

আশরাফুল আবারো আসতেছে জাতীয় দলে



বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রথম সুপারস্টার মোহাম্মদ আশরাফুল তিন বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আজ শনিবার থেকে মুক্ত। এখন থেকে নিয়মিতই ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে পারবেন তিনি। তবে কোনো ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট বা বিপিএল খেলতে পারবেন না আশরাফুল। শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন। তিনি বলেন, “মোহাম্মদ আশরাফুলের নিষেধাজ্ঞা ১৩ আগস্ট শেষ হয়ে যাবার কথা, তবে ব্যাপারে কিছু কন্ডিশন ছিল। তা পূর্ণ করতে পারলে আইসিসি থেকে সার্টিফিকেট অব গুড কন্টাক্ট দেওয়া হবে। ওই সার্টিফিকেট আসলে সে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে পারবে, তবে বিপিএল ছাড়া।
অন্যদিকে বিপিএল ছাড়াও আমাদের দেশে বিসিএলও ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট, আশরাফুল কি পারবে সেই টুর্নামেন্টে অংশ নিতে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “আশরাফুল বিপিএল বা এই ধরনের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক কোনো টুর্নামেন্টে খেলতে পারবে না। আর আমাদের দেশে বিসিএল যেহেতু ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক, এই টুর্নামেন্টে সে খেলতে পারবে কি না, ইস্যুতে আইসিসির কাছেপ্লেয়ার গুড অব কন্ডাক্টচেয়ে মেইল পাঠানো হয়েছে। সেটা পেলেই আর কোন বাঁধা থাকবে না আশরাফুলের। ঘরোয়া লিগেও খেলতে পারবেন। হ্যা, বিসিএলও খেলতে পারবেন তিনি।
তবে বিসিএল খেলতে আশরাফুলকে নির্বাচকদের উপর তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। কেননা জাতীয় লিগের সেরা খেলোয়াড়রাই খেলে থাকেন বিসিএল। তাই এতোদিন পর ফেরাটা আশরাফুলের জন্য সুখকর হবে যদি নির্বাচকদের নজরে আসেন। প্রসঙ্গে নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “জাতীয় লিগের শীর্ষ ৭০-৮০ জন খেলোয়াড়ই সাধারণত বিসিএলে খেলে। সেপ্টেম্বরে বিসিএল শুরুর আগে জাতীয় লিগ নেই। তবে সে খেলতে পারবে কি না এটা নির্ভর করছে নির্বাচক ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর ওপর।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্ট হয়েও বিসিএল খেলতে পারলে সেটা আশরাফুলের জন্য সুসংবাদ হয়ে আসবে। উল্লেখ্য এখন থেকে বিসিবির সকল সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন মোহাম্মদ আশরাফুল।


নামও।
সূত্র জানিয়েছে, আকসু প্রতিনিধিরা খোঁজখবর নিয়ে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে এসেছেন বুঝতে পেরে বিপিএলে ম্যাচ পাতানো স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কথা জিজ্ঞাসাবাদের প্রথম দিনই স্বীকার করে ফেলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। দ্বিতীয় দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও তিনবার স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার কথা তিনি স্বীকার করেন। সেটির সূত্র ধরেই উঠে আসে বাংলাদেশের ওই তিন সাবেক ক্রিকেটারের নাম। আকসু প্রতিনিধিদের আশরাফুল বলেছেন, এই তিন ক্রিকেটারই তাঁকে অন্ধকার ওই জগতের সঙ্গে প্রথম পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। আশরাফুলের ঘনিষ্ঠ কিছু সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দিনেই বিপিএলে ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আসার পর আশরাফুল বুঝতে পারেন, শাস্তি তাঁকে পেতেই হবে। সেটির মাত্রা যাতে কম হয়, সেটি ভেবেই তিনি পরদিন সবকিছু খুলে বলার সিদ্ধান্ত নেন।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া আশরাফুলের জবানবন্দির টুকরাগুলো এক সুতায় গাঁথলে সেটি প্রায় রহস্যোপন্যাসের রূপ নেয়
২০০৪ সালে ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নিজেদের শততম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হারিয়েছিল ভারতকে। পুরো দেশকে উৎসবে মাতিয়ে তোলা ওই দিনটিতেই আশরাফুলের গায়ে লাগে কলঙ্কের প্রথম ছিটা।স্পট ফিক্সারহিসেবে আশরাফুলের অভিষেক এই ম্যাচেই। ম্যাচের আগের দিন টিম হোটেলেই জাভেদ নামে ভারতীয় এক বাজিকরের সঙ্গে আশরাফুলকে পরিচয় করিয়ে দেন খালেদ মাহমুদ, খালেদ মাসুদ মোহাম্মদ রফিক। সেখানেই জানানো হয় করণীয়প্রথম ১৫ ওভারে কমপক্ষে ৬০ রান করতে হবে। সেটি বাংলাদেশ করেও ফেলে, যাতে এক চার দুই ছয়ে আশরাফুলের ৪১ বলে ২৮ রানের বড় ভূমিকা ছিল। জন্য আশরাফুল পান সাড়ে চার লাখ টাকা।
খালেদ মাসুদ প্রসঙ্গ এরপর আর আসেনি। তবে খালেদ মাহমুদ মোহাম্মদ রফিক এসেছেন বারবার। ২০০৯ সালে খালেদ মাহমুদ বাংলাদেশ জাতীয় দলের সহকারী কোচ নির্বাচিত হন। সে বছরই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে ফেরার পর মাহমুদ সুনীল ভাটিয়া নামে এক ভারতীয় বাজিকরের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন আশরাফুলকে। মাহমুদের বাসায় এই পরিচয় পর্বে মোহাম্মদ রফিকও উপস্থিত ছিলেন। সুনীল ভাটিয়া নামটি পাঠকের পরিচিত লাগতে পারে। কদিন আগে শ্রীশান্ত-কাণ্ডে ভারতে গ্রেপ্তার হয়েছেন এই সুনীল। সুনীলের চাওয়া ছিলখুব সামান্য ২০১০ সালের জানুয়ারিতে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে লাঞ্চের পর নির্দিষ্ট তিন ওভারে রান করতে হবে। সেটি প্রথম ইনিংসে না দ্বিতীয় ইনিংসে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে দুই ইনিংসেই লাঞ্চের আগে আউট হয়ে যাওয়ায় আশরাফুলকাজটা করতে সক্ষম হননি।
টাকা অবশ্য অগ্রিমই দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কাজ হয়নি বলে সেই সাত লাখ টাকা ফেরত চেয়ে আশরাফুলকে অনেক চাপ দিয়েছেন সুনীল ভাটিয়া। কখনো সরাসরি ফোন করে, কখনো বা মোহাম্মদ রফিকের মাধ্যমে। শেষ পর্যন্ত গত বছর আশরাফুল ওই সাত লাখ টাকা মোহাম্মদ রফিককে ফেরত দেন। কিন্তু সেটি আরেকটি অপকর্ম করে পাওয়া অর্থ থেকে। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্পট ফিক্সিং করে।
জাভেদ সুনীলের পর এখানেই দৃশ্যপটে আবির্ভাব আশরাফুলের ক্যারিয়ারের তৃতীয় বুকির। ২০০৭ সালে অধিনায়কত্ব পাওয়ার পরই গান্ধী নামে এই ভারতীয় বুকি আশরাফুলকে প্রস্তাব দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আশরাফুল তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছেন বলেই দাবি করেছেন আকসুর প্রতিনিধিদের কাছে। তবে গান্ধীর সঙ্গে আবারও আশরাফুলের যোগাযোগ হয় শ্রীলঙ্কা প্রিমিয়ার লিগ (এসএলপিএল) খেলার সূত্রে। ইংল্যান্ডের ব্ল্যাকহিথে খেলতে যাওয়া আশরাফুলকে ফোন করে ২০১২ এসএলপিএলে রুহুনা রয়্যালসে খেলার প্রস্তাব দেয় গান্ধী। আশরাফুলও প্রস্তাবটা লুফে নেন। রয়্যালসের প্রথম ম্যাচে না খেললেও দ্বিতীয় ম্যাচের আগেই গান্ধী আশরাফুলকে ফোন করে জানান যে, পরদিন তিনি খেলছেন এবং তাতেছোট্টএকটা কাজ করার আছে। --এই তিন ওভারে ১৪ রান করতে হবে। কিন্তু আশরাফুল ষষ্ঠ ওভারেই আউট হয়ে যান। তবে হয়তো ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তাঁকে প্রতিশ্রুত ১০ হাজার ডলার দেওয়া হয়।
সেইভবিষ্যৎকদিনের মধ্যেই চলে আসে। শ্রীলঙ্কায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গান্ধীরঅ্যাসাইনমেন্টপান আশরাফুল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইনিংসের ওভার মিলিয়ে ১০ রানের কম করতে হবে, বিনিময়ে দেওয়া হবে ২৫ লাখ টাকা। ওই দুই ওভারে রান হওয়ায় শর্ত পূরণ হয়। তাতে অবশ্যই আশরাফুলের বড় ভূমিকা। পাওয়ার প্লের মধ্যে ওই দুই ওভারে বল খেলে তিনি করেন রান। পঞ্চম ওভারের চতুর্থ বলে মুশফিকুরের আউট হয়ে যাওয়া এবং নতুন ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ দুটি ডট বল খেলায় কাজটা সহজ হয় তাঁর জন্য। ঢাকায় ফিরে আশরাফুলও ২৫ লাখ টাকা বুঝে পান। সেখান থেকেই সুনীল ভাটিয়ার সাত লাখ টাকা ফেরত দিয়ে আসেন রফিককে। তবে সুনীল সেই টাকা ফেরত না নিয়ে গত বিপিএলেও কাজ করার প্রস্তাব দিয়ে গেছেন।
কদিন আগে দিল্লি পুলিশের সূত্র দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল, সুনীল ভাটিয়া বাংলাদেশের এক নামকরা ক্রিকেটারের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে বলে জানিয়েছেন। পরে পুলিশ এক সংবাদ সম্মেলনে এটি উড়িয়ে দিলেও আকসুর কাছে আশরাফুলের স্বীকারোক্তি প্রশ্ন তুলে দিচ্ছেসেই নামকরা ক্রিকেটারের নাম কি মোহাম্মদ রফিক?

মাহমুদ, মাসুদ রফিকের অস্বীকার
মোহাম্মদ আশরাফুলকে কোনো বুকির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন খালেদ মাসুদ, মোহাম্মদ রফিক খালেদ মাহমুদ। ফিক্সিংয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।
কাল রাতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মাসুদ বলেন, ‘আমরা আশরাফুলকে কোনো বুকির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিইনি। ধরনের কোনো ঘটনা ঘটে নাই।রফিক বলেন, ‘এসব মিথ্যা কথা। আমি সহজ-সরল মানুষ, প্যাঁচঘোঁচ বুঝি না, জানিও না। যারা এসব বলছে, মিথ্যা বলছে।বুকি জাভেদ সুনীল ভাটিয়াকে চেনেন না বলেও দাবি করেন তিনি। একই দাবি মাহমুদেরও, ‘এটা সত্যি নয়। ছাড়া আর কী বলব?’
মন্তব্য করেননি আশরাফুল: বুকিদের সঙ্গে সম্পর্ক স্পট ফিক্সিং নিয়ে মোহাম্মদ আশরাফুলের বক্তব্য জানতে চাইলেআকসুর বিধিনিষেধথাকায় বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

স্পট ফিক্সিং কি?



ম্যাচের কোনো একটি অংশ পাতানোকে বলা হয় স্পট ফিক্সিং। তা হতে পারে নির্দিষ্ট ওভারের নির্দিষ্ট কোনো বলে একটি নো বা ওয়াইড বল, এক ওভার বা নির্দিষ্ট কিছু ওভারে কত রান উঠবে, কোন বোলার কোন প্রান্ত থেকে বোলিং করবেন ইত্যাদি। খেলার বাইরের বিষয় নিয়েও স্পট ফিক্সিং হয়। যেমন কোনো ক্রিকেটার টুপি মাথায় দিয়ে নামবেন কি না, কোন আম্পায়ার কোন প্রান্তে দাঁড়াবেন। টি-টোয়েন্টির প্রসারে ভয়ংকরভাবে ছড়িয়ে পড়েছে স্পট ফিক্সিংও। 

আকসু কি?



আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের অ্যান্টি করাপশন সিকিউরিটি ইউনিট। নব্বই দশকজুড়ে ম্যাচ পাতানো নিয়ে ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড়ের পর ২০০০ সালে এটি গঠন করা হয়।

বুকি কি?



এককথায় বললে, যাঁরা জুয়ার ব্যবসা করেন। বিশ্বের অনেক দেশেই জুয়া বা বাজি ধরা বৈধ। বুকিরা বাড়তি উপার্জনের জন্য অর্থের বিনিময়ে কোনো দল বা খেলোয়াড়কে নির্দিষ্ট কিছু করতে রাজি করান। তখনই এটি রূপ নেয় ম্যাচ ফিক্সিং বা স্পট ফিক্সিংয়ে।


No comments:

Post a Comment

Post Top Ad

Responsive Ads Here