আজ আমি আপনাদের কে জানাবো কত বছর ফেরাউনের লাশ পানির
নিছে ছিল,
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুবহানা তায়ালা এরশাদ করেছেন, ‘ফেরাউন ডুবে মারা গেছে আর মৃত্যুর পরও তার শরীর অক্ষত রাখা হবে, পরবর্তি সীমালংঘনকারীদের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবে।’ “বনী ইসরাইলকে আমি পার করে দিয়েছি নদী, অত:পর তাদের পশ্চাদ্ভাবন করেছে ফেরাউন ও তার সেনাবাহিনী, দুরাচার ও বাড়াবাড়ির উদ্ধেশ্যে, এমনকি যখন তারা ডুবতে আরম্ভ করলো, তখন বলল, এবার বিশ্বাস করে নিচ্ছি কোন মাবুদ নেই তিনি ছাড়া যার ইবাদত করে বনী ইসরাঈলরা। অতএব আজকের দিনে রক্ষা করছি আমি তোমার দেহকে যাতে তা তোমার পরবর্তীদের জন্য নিদর্শন হতে পারে। নি:শন্দেহে বহু লোক আমার মহাশক্তির প্রতি লক্ষ্য করে না।” ঐতিহাসিকগণ ১৮৯৮ সালে ফেরাউনের লাশ উদ্ধার করেন। যা আজ মিশরের কায়রোতে দ্যা রয়েল মমী হলে একটি কাচের সিন্দুকের মধ্যে রয়েছে। এর দৈর্ঘ ২০২ সেন্টিমিটার। ৩১১৬ বছর পানির নীচে থাকা সত্ত্বেও তার লাশে কোন পচন ধরে নি। মুহাম্মদ (স.) এর যুগের আরব জাতি ও অন্যরা মিশরীয়দের মধ্যে, ফেরাউনের পানিতে ডুবে মারা যাওয়া কিংবা তার লাশ সংরক্ষণ- এটা মুসলমান তথা সারা বিশ্বের জাতি গোষ্ঠির জন্য এক অনন্য নিদর্শন।
ফেরাউনের মৃত দেহটিকে ১৮৮১ সালে মিশরের এক নদীর উপত্যকায় (পাহাড়ের মাঝখানে, যেখান দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়েছে ) পাওয়া গিয়েছিল বলে জানা যায় । কিন্তু, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ১৪০০ বছর পূর্বেই পবিত্র কুরআনে ফেরাউনের ঘটনা উল্লেখ করেছেন । ঐতিহাসিকদের মতে, ফেরাউনের দেহটি যখন পাওয়া যায়, তখন ঐ দেহটির বয়স হয়েছিল প্রায় ৩০০০ বছরের মত।
আল্লাহর নবী হযরত মুসা (আঃ) ঐ পাপিষ্ঠ ফেরাউনকে অনেকবার ইসলামের দাওয়াত দিয়েছিলেন ; কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্টতম ঐ নাফরমান ফেরাউন, নবী মুসা (আঃ) এর আহবানে সাড়া তো দেয়নি বরং অত্যাচার আর জুলুমের সীমা অতিক্রম করেছিল। অতঃপর ফেরাউনের যুলুমের আয়ু যখন শেষ হয়ে আসে, মহান আল্লাহ তখন ঐ নাফরমানকে নদীতে ডুবিয়ে মেরেছেন এবং মানবজাতির নিদর্শনের জন্য তার মৃত দেহ সংরক্ষন করেছেন । মহান আল্লাহ বলেন - ”এখন তো আমি কেবল তোমার লাশটাকেই রক্ষা করবো যাতে তুমি পরবর্তীদের জন্য শিক্ষণীয় নিদর্শন হয়ে থাকতে পারো । যদিও এমন অনেক মানুষ আছে যারা আমার নিদর্শন সমূহ থেকে উদাসীন।“ ( সুরা ইউনুসঃ আয়াত - ৯২ ) আল্লাহ অন্য এক জায়গায় ফেরাউনের এই ভীতিকর অবস্থার সংবাদ জানিয়ে বলেছেনঃ “এটি একটি পয়গাম সব মানুষের জন্যে এবং এটি পাঠানো হয়েছে এ জন্য যাতে এর মাধ্যমে তাদেরকে সতর্ক করা যায় এবং তারা জেনে নিতে পারে যে, আল্লাহ একমাত্র তিনিই আর যারা বুদ্ধিমান তারা যেনো চিন্তা ভাবনা করে” ( সুরা ইব্রাহীমঃ আয়াত-৫২ ) তাই ফেরাউনের উত্তরসুরী যারা বর্তমানে তাদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে যাচ্ছেতাই করছে, তাদেরকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে । ফেরাউনের লাশ সংরক্ষণ করে আল্লাহ যেভাবে মানব জাতির জন্য নিদর্শন হিসেবে রেখে দিয়েছেন ঠিক তেমনিই হয়তো জালিমদের কৃতকর্ম ও পরিণতিকে সংরক্ষণ করে তা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ কালের জন্য নিদর্শন হিসেবে রাখার বন্দোবস্ত করবেন। আল্লাহ আমাদেরকে সহিহ পথে হেদায়েত নসীব করুন আর ফেরাউনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শক্তি দান করুন । আমীন ।
No comments:
Post a Comment