আইয়ামে জাহেলিয়াত কি? আইয়ামে জাহেলিয়াত এর মধ্যে দুইটি শব্দ রয়েছে। প্রথমটি আইয়াম। যার অর্থ – দিন, দিবস, রাতের বিপরীত ইত্যাদি। তবে এখানে আইয়াম দ্বারা যুগ বোঝানো হয়েছে।
আর জাহেলিয়াত অর্থ – অজ্ঞতা, বর্বরতা, কুসংস্কার, তমসা বা অন্ধকার ইত্যাদি। তাই আইয়ামে জাহেলিয়াতের অর্থ হবে অন্ধকার যুগ বা কুসংস্কারাচ্ছন্ন যুগ। ইসলামের ইতিহাসের পরিভাষায় এ শব্দটি রাসূল (স) এর আবির্ভাবের পূর্বেকার আরবদের অবস্থার উপর ব্যবহার হত। কেননা এ যুগে সাধারণত আরবগণ স্বভাব ও চরিত্রের দিক থেকে অজ্ঞতা ও মুর্খতার চরম অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। যদিও কোন কোন ইতিহাসবিদ আইয়ামে জাহেলিয়াত বলতে হযরত ঈসা (আ) ও রাসূল (স) এর মধ্যকার ফাতরাতে ওহী তথা ওহী মুলতবি সময় উদ্দ্যেশ্য করেছেন। ঐতিহাসিকদের বিবেচনায় ইসলাম আবির্ভাবের ঠিক পূর্ববর্তী যুগকে আইয়ামে জাহেলিয়াত বলা হয়। ড. নিকলসন ইসলাম আবির্ভাবের পূর্ববর্তী এক শতাব্দি কালকে আইয়ামে জাহেলিয়া যুগ বলে গণ্য করেছেন। অধ্যাপক পি.কে হিট্টি বলেন, সাধারণভাবে আইয়ামে জাহেলিয়া বলতে অজ্ঞতার যুগ বা বর্বরতার যুগ বুঝায়। আইয়ামে জাহেলিয়ার সময়কাল আইয়ামে জাহেলিয়ার সময়কাল নিয়ে ঐতিহাসিকদের মাঝে মতভেদ রয়েছে। যেমন – ১. কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে, হযরত আদম (আ) থেকে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ (স) এর নবুয়ত প্রাপ্তির পূর্ব যুগকে আইয়ামে জাহেলিয়াত বলা হয়। কিন্তু এই মতামত গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা তাদের মাঝখানে বহু নবী – রাসূলের আগমন ঘটেছে। ২. কারো কারো মতে, হযরত ঈসা (আ) এর উর্ধ্ব গমনের পর থেকে ইসলামের আবির্ভাবের পুর্ব পর্যন্ত সময়কে আইয়ামে জাহেলিয়া বলা হয়। তবে এ মতও গ্রহণযোগ্য নয়। ৩. ঐতিহাসিক মুইর বলেন, হযরত ঈসা (আ) হযরত মুহাম্মদ (স) এর মধ্যকার সময়কেই আইয়ামে জাহেলিয়া বলা হয়। ৪. ড. এস এম ইমামউদ্দীনের মতে, হযরত মুহাম্মদ (স) এর জন্মের পুর্বে ৬১০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এক শতাব্দিকাল সময়কে আইয়ামে জাহেলিয়া বলে।
No comments:
Post a Comment